বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরকীয়ার প্রবণতা পশ্চিমা বিশ্বে। পশ্চিমা দুনিয়ায় স্বামীরা অহরহই স্ত্রীদের ধোকা দেন। বাংলাদেশে এক জরিপে দেখা যায়, স্বামীর পরকীরার কারণে ৮০ শতাংশ স্ত্রী ডিভোর্সের আবেদন করেন।
সাধারণত ঘরে স্ত্রী রেখে অন্য কোনও নারীর সঙ্গে দৈহিক মেলামেলা কিংবা স্বামী থাকতেও পর পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলাকেই পরকীয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই পরকীয়া সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে অগ্রহণযোগ্য আচরণ। কিছু কিছু দেশে তো ঘোরতর অপরাধ। কিন্তু ’নিষিদ্ধ’ এই বিষয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছেই। তামাম দুনিয়ায় ক্রমাগতভাবে বাড়ছে পরকীয়া।

আরো পড়ুন

Error: No articles to display


বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরকীয়া নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন আইন জারি রয়েছে। এক নজরে দেখে নেয়া যাক, কোন দেশে পরকীয়া নিয়ে কোন আইন রয়েছে।

ভারত: ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে পরকীয়াকে বৈধতা দেয়। দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা বলেন, ’পরস্ত্রী কামনা করেও অপরাধবোধে ভোগার কোনো কারণ নেই পুরুষের। বরং এমন সম্পর্কের ক্ষেত্রে শাস্তি বিধান করাটাই অসাংবিধানিক। নারী-পুরুষের সমান অধিকারবিরোধী। ব্যভিচার কোনো ’অপরাধ’ নয়। বিবাহিত নারী যদি পর পুরুষের অঙ্কশায়িনী হন তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।’

পাকিস্তান: ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ১৯৭৯ সালের হুদুদ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী পরকীয়াকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা করে। তবে এ ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে মহিলাদের শাস্তির পরিমাণ বেশি রাখা হয়েছে।


ফিলিপিন্স: ফিলিপিন্সে পরকীয়া এখনও অপরাধ। স্ত্রী আর তার সঙ্গীর ৬ বছর অবধি জেল হতে পারে, যদি তার স্বামী প্রমাণ করতে পারেন যে, ওই পার্টনারের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে তার স্ত্রীর। অন্য দিকে আবার স্বামীর অন্যকোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক যদি স্ত্রী প্রমাণ করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে স্বামীর ১ দিন থেকে সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে ৪ বছর।

চীন: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ রাষ্ট্র চীনেও পরকীয়াকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। সেখানে পরকীয়া কোনও অপরাধ নয়। তবে ভারতের মতো চীনের আদালতও মনে করে, পরকীয়া বিবাহবিচ্ছেদের অন্যতম কারণ। চীনে বিবাহ আইনের ৪৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাবেন।

সৌদি আরব: মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মীয় রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবে পরকীয়াকে বিরাট অপরাধ বলে গন্য করা হয়। স্বামী বা স্ত্রী যে কারও অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা, নির্বিচার আটক, জেল, মারধর এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।


দক্ষিণ কোরিয়া: পরকীয়া অপরাধ নয়- ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়াও এক আইনে এমনটিই জানিয়েছিল। ওই বছর ৯ জন বিচারকের বেঞ্চ ১৯৫৩ সালের পরকীয়া সংক্রান্ত পুরনো আইন বাতিল করে দেন। ওই আইনে স্বামী বা স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৩ বছরের সাজার বিধান ছিল।

তাইওয়ান: চীনের প্রতিবেশী দেশ তাইওয়ানে পরকীয়া বরাবরই অপরাধ। সে দেশে পরকীয়ার অপরাধে স্বামী বা স্ত্রী যে কারও এক বছরের কারাদণ্ড হয়। তাইওয়ানের এক জেন্ডার ইকুয়ালিস্টের কথায়, তাইওয়ানিজ পুরুষরা ধরা পড়লে তারা সাধারণত স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চায়। যেহেতু তারা রোজগারের উৎস তাই স্ত্রীরা স্বামীদের ক্ষমা করে মামলা করা থেকে বিরত থাকেন। তবে কোনও স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত প্রমাণ হলে তাদের সাজা ভোগ করতেই হয়।

এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি রাজ্যে পরকীয়াকে এখনও অপরাধ বলে গন্য করা হয়। তবে মার্কিনীদের জরিমানা কিংবা শাস্তি পেতে হয় না। ইউরোপ কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় পরকীয়া কোনও অপরাধ নয়। তবে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়াতে পরকীয়া গুরুত্বর অপরাধ বলে বিবেচনা করা হয়।

News Page Below Ad

আরো পড়ুন

Error: No articles to display